চিকুনগুনিয়া ভাইরাস Source: https://bn.wikipedia.org/wiki |
চিকুনগুনিয়া রোগ কী?
চিকুনগুনিয়া
ভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট রোগের নামই হল চিকুনগুনিয়া রোগ। শরীরে এই ভাইরাস প্রবেশ
করলে কয়েক দিনের মধ্যেই হঠাৎ জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণসমূহ
দেখা দেয়। এই রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি খুবই কম যা প্রতি হাজারে একজন বা এর থেকেও কম।
বয়স্ক ব্যক্তিরা এই রোগে বেশি জটিলতায় ভোগে।
চিকুনগুনিয়া রোগের কারণঃ
চিগুনগুনিয়া
ভাইরাস একটি ‘আরএনএ’ ভাইরাস যা ‘টোগাভাইরিডি’ পরিবারের ‘আলফাভাইরাস’গণের
অন্তর্ভুক্ত। মশার কামড়ের মাধ্যমে এই রোগ মানবদেহে
প্রবেশ করে। এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের বাহক। এই দুই প্রজাতির মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়
দিয়ে থাকে। এই ভাইরাসের জীবন চক্রে মানুষ ছাড়াও পাখি, বানর, ও ইঁদুর বিদ্যমান।
চিকুনগুনিয়া রোগের লক্ষণগুলোকে জিকা জ্বর বা ডেঙ্গু জ্বরের সাথে ভুল করে তুলনা করা
হয়। ডেঙ্গু ভাইরাসের সাথে এই ভাইরাসের পার্থক্য হলো, ডেঙ্গু ভাইরাস
শুধুমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আক্রান্ত করে।
উপসর্গসমূহঃ
আক্রান্ত ব্যক্তির পায়ে ফুসকুড়ি Source: https://bn.wikipedia.org/wiki |
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কাপনি বা ঘাম ছাড়া আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বরে ভোগে,
চোখ জ্বালা, বমি বমি ভাব, জয়েন্টে ব্যাথা ও শরীরে ফুসকুড়ি হয়। সাধারণত দু-তিন দিন পর
জ্বর কমতে শুরে করে ও ফুসকুড়ির আবির্ভাব হয়। এছাড়াও
রোগির প্রচন্ড মাথাব্যথা, অবসাদ, পেটব্যথা, জয়েন্ট প্রদাহ, বড়দের আর্থ্রাইটিস,
ও আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা হয়ে থাকে। সাধারণ এই রোগটি শুরু হয় আকষ্মিক শরীরের তাপমাত্রা
(১০২০ফা থেকে ১০৪০ফা পর্যন্ত) বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং তা সাত থেকে
দশ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। রক্তে ভাইরাসের মাত্রা যত বাড়তে থাকে উপসর্গগুলোর
তীব্রতাও তত বাড়তে থাকে।
প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ
চিগুনগুনিয়া ভাইরাসের কার্যকরী কোনরূপ টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। মশার কামড় থেকে
রাক্ষার জন্য মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো, ফুলহাতা জামা ব্যবহার, ফুলপ্যান্ট, বসত বাড়ির
আশে পাশে পানি জমতে না দেওয়া, বিভিন্ন উপায়ে মশার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
নেওয়া ইত্যাদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। স্থির পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে
তাই ফুলের টব, পুরাতন বালতি, টায়ার ইত্যাদি যেসব স্থানে পানি জমে সেদিকে লক্ষ্য
রাখতে হবে এবং নিয়মিত পানি অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে। এডিস মশা প্রাণীর রক্ত
গ্রহণের পর ডিম পাড়তে তিন দিন বিশ্রমা নেয়। মশার ডিমগুলো এক বছর পর্যন্ত
পরিস্ফুটনের জন্য সক্রিয় থাকতে পারে। অল্প পরিমান পানিই ডিম ফুটানোর জন্য যথেষ্ট। তাই
মশা নিয়ন্ত্রণ ও মশার কামড় থেকে আত্মরক্ষাই হলো চিকুনগুনিয়া রোগের প্রধান প্রতিরোধ
ব্যবস্থা।
চিকিৎসাঃ
এই রোগের
কোন প্রকার ঔষধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে জ্বরের স্বাভাবিক ঔষধ সেবন
করতে পারে। রোগিকে অবশ্যই বিশ্রামে থাকতে হবে। প্রচুর পরিমান পানি ও অন্যান্য তরল
খাবার খেতে হবে। ভাইরাস যেন অন্য ব্যক্তিকে আক্রান্ত করতে না পারে সেজন্য রোগিকে
মশারি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্যসুত্রঃ
https://bn.wikipedia.org/wiki
No comments:
Post a Comment